বাংলাদেশের লোকজন কি জানে না লন্ডনে কি হচ্ছে?: "গিয়েছিলাম লন্ডন হিত্রো এয়ারপোর্ট-এ এক বন্ধুকে বিদায় দিতে। অবাক হয়ে গেলাম গণ হারে এশিয়ান শিক্ষার্থীদের আগমন দেখে। চারদিকে ইন্ডিয়ান, শ্রীলংকান, পাকিস্তানি, আর বাংলাদেশী। তুলনামুলক ইন্ডিয়ান বেশি মনে হল।প্রতিদিন যে ধরনের করুন পরিস্তিথি দেখে দিন আরম্ভ করতে হয় ,তাতে এরকম আগমনের জোয়ার দেখে ভয়-ই লাগে। এক বাংগালী ছেলে আমার কাছে ভাঙ্গা ইংরেজিতে জানতে চাইল কিভাবে সেন্ট্রাল লন্ডনে যাওয়া যায়। আমি বাংলায় জিজ্ঞেস করলাম ঢাকা থেকে এসেছেন? ও আমার কথা শুনে আনন্দিত হয়ে বললেন হ্যাঁ ভাই, বন্ধুর কাজ, তাই নিতে আসতে পারেনি। আমি বললাম আমি ইস্ট লন্ডনে যাচ্ছি ,আমার সাথে চলুন।
ট্রেনে আসতে আসতে তার এ দেশে আসার কাহিনী শুনলাম। জিজ্ঞেস করলাম কত টাকা খরচ হয়েছে আসতে? 'ভাই সব মিলিয়ে ৬ লাখ ৪০ হাজারের মত। ইস্ট ব্যংক কলেজ এ বি বি এ করতে এসেছি।'
তার পারিবারিক অবস্থা আর অন্যান্য কাহিনী শুনে লন্ডনের পরিস্তিতি সম্পর্কে কিছু বলতে ইচ্ছে হলনা।ফোন নাম্বার দিয়ে বললাম কখনো দরকার হলে কল দিয়েন। জানি ১৯ বছরের ছেলেটি আমাকে নিশ্চিত কল করবে। একটি কাজ দরকার, থাকার জায়গা দরকার। আর আমি এও জানি আমি তার জন্য কিছুই করতে পারবনা। প্রতিদিন এত অনুরোধ। আর কত। রাতে খেতে বসে ঠিক মত খেতে পারলাম না। ১৯ বছরের সহজ সরল ছেলেটির চেহারাটা বার বার মনে হচ্ছে। জিজ্ঞেস করছিল ভাই ৩৫০ পাউন্ড দিয়ে কয় মাস চলতে পারবো। আমি বললাম পারবেন।কিছু দিন পারবেন, আশা করি সমস্যা হবেনা।
লন্ডনের রাস্তায় রাস্তায় ছেলেদের আহাজারি কি দেশে লোকজন জানছে না। যদি জেনে থাকে তাহলে কেন এখনো এত ছেলে অন্ধকারের দিকে পা দিচ্ছে? আর কত কষ্ট দেখলে দেশের লোকজন এ দেশে আশা বন্ধ করবে? ব্লগে অনেকের মন্তব্য দেখে অবাক হলাম। এসব বলে নাকি কোন লাভ নেই। ভাই লাভ-লোকসানের কথা বাদ দেন। আলতাফ আলী পার্ক অথবা হোয়াইট চ্যাপেল স্টেশনে গিয়ে দেখে আসুন আমাদের ভাইয়েরা কিভাবে দিন কাটাচ্ছেন। দেশের টিভি, পত্রিকা এখনো কিভাবে চুপ করে বসে আছেন জানি না। দয়া করে সবাইকে বলুন লন্ডনের অবস্থা ভয়াবহ। লন্ডনে না খেয়ে মরার চেয়ে দেশে ১ বেলা অভুক্ত থাকা হাজার গুনে ভাল।
"
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন