বুধবার, ৭ অক্টোবর, ২০০৯

Illuminati : এক বিশাল ষড়যন্ত্র – শেষ পর্ব

Illuminati : এক বিশাল ষড়যন্ত্র – শেষ পর্ব: "আগের পর্বগুলো



Illuminati : এক বিশাল ষড়যন্ত্র – ১



Illuminati : এক বিশাল ষড়যন্ত্র – ২



Illuminati : এক বিশাল ষড়যন্ত্র – ৩




Illuminati : এক বিশাল ষড়যন্ত্র – ৪






শেষ পর্বঃ



Titanic! কিসের কথা বলব, মুভি নাকি শিপের। আমাদের কাছে দুটিই খুব আকর্ষণীয় বিষয়। কিন্তু আসল সত্য অন্য রকম। টাইটানিক ডুবে যাওয়ার আগ পর্যন্ত আমেরিকার ফেডারেল রিজার্ভ ছিল গোল্ড কিন্তু এর পর সেটিকে নিয়ে আসা হয় কাগুজে নোটে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জন্মও এর পর থেকেই। বলতে পারেন টাইটানিক ডুবে যাওয়ার সাথে এসবের কি সম্পর্ক! আজকের পর্বে সেই সবই আলোচনা করব। আপনি কি সিস্টার শিপের নাম শুনেছেন? কিংবা সিস্টার সিটি? সিস্টার সিটি বলা হয় এমন দুই শহরকে যাদের ভেতর ভৌগলিক ভাবে অনেক মিল থাকে। যেমন দুইটি দেশের পোর্ট সিটি। কোরিয়ার কথা যদি ধরেন তাহলে সেটি হবে বুসান এবং বাংলাদেশের চিটাগাং, কারণ এই দুটি শহর সমুদ্রের পাশে এবং পোর্ট সিটি। শিপের ক্ষেত্রেও তেমনই সিস্টার শিপ থাকে । যখন একটি শিপের অনুরূপ আর একটি শিপ বানানো হয় এবং তাদের ডিজাইনগত ভাবে মিল থাকে এবং সাথে আউটলুক। পাশাপাশি দুইটি সিস্টার শিপকে রাখলে চেনা অনেক কঠিন। অনেক সময় দুইটি শিপ এক সাথে থাকতে পারে অথবা একটি শিপ ভেঙ্গে ফেলার পর অনুরূপ আর একটি শিপ বানানো হলে তাদেরকেও সিস্টার শিপ বলে। উদাহরণ হল কুইন মেরি-১ এবং কুইন মেরি-২। আপনি কি জানতেন টাইটানিকের সিস্টার শিপ ছিল এবং তার নাম ছিল অলিম্পিক? অলিম্পিক আগে বানানো এবং টাইটানিক পরে বানানো। পার্থক্য যেটুকু ছিল তা কেউ না জানালে বের করা প্রায় অসম্ভব। অলিম্পিক ১৯১১ সালে ব্রিটিশ নেভির একটা শিপের সাথে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলো অলিম্পিকের পূর্ণ ইন্স্যুরেন্স দিতে অপারগতা জানালে অলিম্পিককে সমুদ্রে নিয়ে যাওয়া রিস্ক মনে করে স্টার লাইনার কম্পানি। আবার এই দিকে Nelson Aldrich , Frank Vanderlip, Henry Davison, J.P Morgan, Paul Warburg যারা কিনা আমেরিকাতে সেন্ট্রাল ব্যাংকিং সিস্টেম চালু করার চেষ্টা করছিল, কিন্তু John Jacob Astor, Benjamin Guggenhein, Isador Strauss মত কিছু ক্ষমতাবান মানুষের বিরোধিতার কারণে করতে পারছিল না, পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর ষড়যন্ত্র নিয়ে আবির্ভূত হয়। Rockefeller, J.P Morgan এর মত ফাইনান্সিং কোম্পানীর এই সব মালিক এবং Rothschild ব্যাংকের মালিক ৯ দিন ধরে মিটিং করেন।



পরিকল্পনা করা হয় এই ভাবে



১। টাইটানিক নামের একটি শিপ বানানো হবে এবং এই শিপটিকে ঠিক অলিম্পিকের মতো করে বানানো হবে। এরপর টাইটানিকের ইন্স্যুরেন্স করা হবে। টাইটানিকের সাথে অলিম্পিককে ইন্টারচেঞ্জ করা হবে। তাহলে ডুবানো হবে অলিম্পিক কিন্তু সবাই জানবে টাইটানিক ডুবেছে, সুতরাং টাইটানিকের ইন্স্যুরেন্সের জন্য তারা টাকা ফেরত পাবেন। কিন্তু টাইটানিক পরে অলিম্পিকের নামানুসারে সমুদ্রে চলবে।



২। প্রাথমিক লাভের চেয়ে পরের লাভটা অনেক বেশি, আর সেটি হল টাইটানিকের প্রথম ভয়েজে আমন্ত্রণ জানানো হবে সেই সব মানুষকে যারা আমেরিকাতে সেন্ট্রাল ব্যাংকিং সিস্টেমের বিরোধিতা করেন।



তাদের প্ল্যান ঠিকমত কাজ করেছিল কারণ John Jacob Astor, Benjamin Guggenhein, Isador Strauss-রা সেই প্রথম ভয়েজে ছিলেন এবং সবাই মারা যান। সুতরাং কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমেরিকাতে স্থাপনে আর কোন বাধা কাজ করেনি, ছোট ছোট বাধাগুলোকে তারা কিনে ফেলেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সমস্যা হচ্ছে, এরা সরকারকে ঋণ দেয় সুদ সহ, সরকারকে এই ঋণ শোধ করতে হয়, আবার ঋণ নিয়ে সেই টাকারও আবার সুদ আছে। এটি একটি বিশাল ঘুঘু চক্কর। সরকার সব সময় তার টাকার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে দায়বদ্ধ থাকে, এবং অর্থনীতির ভাল মন্দ সব কিছু নির্ভর করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের টাকা সরবরাহের উপর। আমেরিকার ফেডারেল রিজার্ভ আমেরিকার সরকারের নয়, এটি একটি প্রাইভেট ব্যাংক এবং এই ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ চাইলেই আমেরিকাকে দেউলিয়া করে দিতে পারে যার কিছু খেলা অবশ্য ইদানিং দেখা যাচ্ছে।







প্রথমটি অলিম্পিক রিপিয়ারিংরত, পরেরটা টাইটানিক, এবং শেষেরটা সেই ৯ দিন ধরে মিটিংয়ের জায়গা।



Jesuit (Society of Jesus)- এর মেম্বার ছিলেন এইসব ষড়যন্ত্রকারী এবং Rothschild ব্যাংক যা কিনা ভ্যাটিকানের সম্পদের উপর দাঁড়ানো, এবং এরাই এখন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ধনী। কিন্তু এরাই যেহেতু আমেরিকার ফেডারেল রিজার্ভের মালিক তাই তারা আপনার আমার মত কাগজের নোটের উপর বিশ্বাস না রেখে নিজেদের সম্পদ্গুলোকে গোল্ডে পরিবর্তন করে বাড়ির সিন্দুকে রেখেছে। কাগজের নোট তারা ইচ্ছে করলেই ছাপাতে পারে।



Jesuit এর আর একজন মেম্বারের নাম শুনলে আপনার পিলে চমকে যাবে, আর তিনি হচ্ছেন Edward Smith, হ্যাঁ টাইটানিকের কাপ্তান। ২৬ বছর তিনি উত্তর আটলান্টিকে জাহাজ চালিয়েছেন এবং তিনি এই পথের নাড়ি নক্ষত্র জানতেন কিন্তু তারপরও তিনি সবচেয়ে বেশি স্পিডে জাহাজ চালানর নির্দেশ দেন যেখানে আকাশে চাঁদ ছিলনা। ২২ নটিক্যাল মাইল বেগে জাহাজ চালানোর নির্দেশই শুধু নয়, তিনি SOS পাঠিয়েছেন ১ ঘন্টা পর এবং বিপদে পড়লে যেখানে লাল আলোর সংকেত দেওয়ার কথা সেখানে তিনি সাদা আলোর আতশ পোড়ান, যা আসলে জাহাজে কোন পার্টিকে বোঝায়। সেখানে মানুষ বাঁচানোর এত কম লাইফবোট ছিল যে বাকি মানুষ মরতে বাধ্য। জ়েপি মরগ্যানেরও টাইটানিকে ভ্রমণ করার কথা ছিল। কিন্তু তিনি যাত্রার আগেরদিন জরুরি মিটিংয়ের কথা বলে এড়িয়ে যান। Edward Smith ছিলেন “Jesuit Tempore Co-Adjutor” যার অর্থ তিনি প্রিস্ট নন কিন্তু Jesuit-এর হুকুম পালন করেন নিজের কর্মের দ্বারা। আগের পর্বগুলোতে দেখানো হয়েছে যে ভ্যাটিকান আসলে ইলুমিনাটির দখলে সুতরাং যা কিছু ঘটছে , টাইটানিক ডোবার পর থেকে ডলারের আবির্ভাব পর্যন্ত এবং ১ ডলারের ইলুমিনাটির সিল দেখে আমরা বলতেই পারি এই সব কিছুর পেছনে আছে ইলুমিনাটির অদৃশ্য হাত।



এখন আপনার কিন্তু একটাই প্রশ্ন মনে ঘুরপাক করছে ...এতই যখন সমস্যা তো সবাই এই মানুষদের ধরছে না কেন এবং তাদের বর্তমান সংগঠন কোনটা। Bilderberg নাম এই গ্রুপের। এদের প্রথম কনফারেন্স হয় ১৯৫৪ সালে Bilderberg হোটেলে। কোন অফিসিয়াল নাম না থাকায় এই গ্রুপের নাম হয়ে যায় Bilderberg গ্রুপ। এর মেম্বাররা পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে আছে। কিছু নাম শুনলে হয়ত আপনার মনে হবে আসলেই এদেরকে স্পর্শ করা অসম্ভব যদি কোন মিরাকল না ঘটে। বারাক ওবামা, হিলারী, প্রিন্স চার্লস, বুশ, বেন বারনাকে(চেয়ারম্যান , ফেডারেল রিজার্ভ), টনি ব্লেয়ার, হেনরি কিসিঞ্জার, কন্ডেলিটসা রাইস, জুয়ান কারলোস (স্পেনের রাজা) সহ আরো অনেকে। জুন ২০০৮ সালে হিলারি ক্লিন্টন এবং ওবামা একসাথে Westfields Marriot (Washington DC) হোটেলে Bilderberg গ্রুপের সাথে মিটিং করেন। ওবামা তার একটি নির্বাচনী ওয়াদাও পালন করেননি বরং সব ভেঙ্গে চলেছেন, কারণ তিনি সেই গ্রুপের-ই একজন। ১৯৬০ এর দিকে Bilderberg গ্রুপ সিদ্ধান্ত নেয় তেলের দাম বাড়ানোর এবং অজুহাত দেখানোর জন্য তারা কি ব্যবহার করেছে জানেন? আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ। এই যুদ্ধ ছিল আগের মিটিং এর ফসল।









Bilderberg হোটেল, ২০০৮ সালে Bilderberg মিটিংএ বেন বারনাকে (চেয়ারম্যান, ফেডারেল রিজার্ভ, USA) (সূত্রঃ উইকিপিডিয়া)



নাইট্‌স টেম্পলেররা (Warrior Monk) প্রথমে ব্রাঞ্চ ব্যাংকিং শুরু করে, কিন্তু যখন এদেরকে হত্যা করা হয়, তখন এদের ভেতর যারা বেঁচে যায় তারা শুধু তাদের পোশাক এবং ব্যবহার-ই পরিবর্তন করেনি গোপন করেছে তাদের পরিচয়। তারা অনেকেই স্কটল্যান্ডে চলে যায় এবং প্রতিষ্ঠা করে ফ্রিম্যাসন। সমস্ত ইউরোপে শুরু হয় ব্যাংকিং। আজকের সারা পৃথিবীর ব্যাংক শুধু আমাদের টাকা নয় আমাদের জীবনও নিয়ন্ত্রণ করে। ব্যাংকের ভরাডুবির কারণেই সব দেশের অর্থনীতির এই দুর্দশা।



শুধু ব্যাংকিং-ই নয়, আগের পর্বের আলোচনা থেকে আমরা সহজে একটা কথা বুঝতে পারি যে, আমাদের অজান্তেই আমরা একটি বিশাল ষড়যন্ত্রের ভেতর অবস্থান করছি।



চীন সব দিক দিয়েই উপর উঠছে, আমেরিকার পর এখন তাদের-ই স্বর্ণের মজুদ সবচেয়ে বেশি। এবং কিছুদিন আগে আরো কম ছিল কিন্তু তারা সেটি হঠাৎ করেই দ্বিগুণ করে ফেলেছে। এখন তারা পৃথিবীতে একটি ভিন্ন টাকাকে সব দেশের মজুদের জন্য চাপ দিচ্ছে যা “The new world order” এর একটি অংশ।



শেষ।



ধন্যবাদ"

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন